প্রতিদিন রাতের আকাশে আমরা ছোট-বড়, উজ্জ্বল অথবা ক্ষীণ অসংখ্য নক্ষত্র দেখতে পাই। তাদের দিকে তাকিয়ে আমরা স্বাভাবিকভাবেই বিস্ময় অনুভব করি। আমরা ধরেই নিই যে, ওগুলোকে গণনা করা যাবে না। আকাশের নক্ষত্ররাজি যে অগণন তাতে কোনো সন্দেহ নেই, কিন্তু তোমরা শুনলে আশ্চর্য হবে, এই অসংখ্য তারাগুলোর মধ্যে প্রায় ৬০০০ তারা দূরবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্য ছাড়াই খালি চোখে দেখা যায়।
অবশ্য তার মানে এই নয় যে, তোমরা আকাশের দিকে তাকিয়েই ৬০০০ তারকা গুণে ফেলতে পারবে। পৃথিবীর যে কোনো স্থান থেকে একটা সময়ে আকাশের অর্ধেকটাই দেখা যায়, বাকি অর্ধেক থাকে অন্যদিকে। দিগন্তের কাছাকাছি অনেক তারাই কুয়াশার জন্য দেখা যায় না। যদি কেউ তারাগুলো গুণতে শুরু করে তাহলে সম্ভবত সে এক হাজারের বেশি গুণে উঠতে পারবে না। যদি আমরা টেলিস্কোপের সঙ্গে ক্যামেরা যুক্ত করে একই জায়গা থেকে তারাদের চিত্রগ্রহণ করি তাহলে সেই ছবি থেকে আমরা খালি চোখে দেখা সংখ্যার থেকে অনেক বেশি সংখ্যক তারা গুণতে পারব।
অত্যন্ত শক্তিশালী দূরবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে আমরা বহুদূরের মৃদু দীপ্তময় তারাগুলোও দেখতে পাই। এইভাবে প্রায় ১০০,০০০,০০০-এর থেকে বেশি তারার ছবি তোলা সম্ভব। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা প্রায় ৪,৫৭,০০০-এরও বেশি সংখ্যক নক্ষত্রকে চিহ্নিত করতে সফল হয়েছেন।
এখন প্রশ্ন ওঠে, আমরা কেন বেশি সংখ্যক তারা গুণতে পারি না। আসলে, বেশ কিছু তারারই আকৃতি, রং, উত্তাপ, উজ্জ্বল এবং পৃথিবী থেকে দূরত্বের দিক দিয়ে একের সঙ্গে অন্যের পার্থক্য থাকে। আমরা কেবল আকারে বড় এবং পৃথিবী থেকে স্বল্প দূরত্বে অবস্থিত অধিক উজ্জ্বল তারাগুলোকেই গুণতে পারি। কম উজ্জ্বল, ক্ষুদ্রাকৃতি এবং পৃথিবী থেকে অধিক দূরবর্তী তারাগুলো আমরা দূরবীক্ষণের সাহায্য ছাড়া দেখতে পাই না।
'
Leave a Comment