মানুষ স্তন্যপায়ী জীব আর চুল বা লোম থাকা সকল স্তন্যপায়ী প্রাণীর এক বিশেষ বৈশিষ্ট্য । আমাদের প্রত্যেকের মাথায় এক থেকে দু লাখ চুল থাকে । প্রতিমাসে আধ ইঞ্চি করে এই চুল বর্ধিত হয়। প্রাপ্তবয়স্কদের মাথায়, বগলে ও নিম্নাঙ্গে চুল জন্মায় । বয়স্ক পুরুষদের বুকে ও মুখেও চুল জন্মে।
চুলের যে অংশটা দেখা যায় তাকে 'শ্যাফট' (Shaft) বলে। কাটিবল (Cutical), করটেক্স (Cortex) এবং নেডুলা (Nedula) নামে এর তিনটি স্তর থাকে। চুলের অদৃশ্য অংশকে বলে মূল (Root)। সমগ্র মূপটি "হেয়ার ফলিকলের" (Hair fallicle) মধ্যে অবস্থিত থাকে। 'হেয়ার ফলিকল' হলো চামড়ার নিচে অবস্থিত ক্ষুদ্র এক ধরনের কোষ বা থলি। ফলিকলের নিচে “প্যাপিলা” (Papilla) নামে ক্ষুদ্র পীড়িকা বা গুটি (Bump) থাকে। এখান থেকেই নতুন চুল দ্রুত বেড়ে চলে। এর থাকে একটি ধমনী যা চুলের মূলকে খাদ্য যোগায়।
মূলের গোড়ায় নতুন কোষ সৃষ্টি হওয়ায় চুল বাড়তে থাকে। প্যাপিলার চারিদিকে যখন নতুন কোষ জন্মে তখন পুরনো কোষগুলো বাইরে বহিষ্কৃত হয় এবং মারা যায়। নতুন কোষেরা মৃতকোষের দণ্ড বা মজ্জাকে (Cell rod) ফলিকলের বাইরে বের করে দেয়। এমনি করে চুল বাড়ে এবং পরবর্তীকালে দৃশ্যমান শ্যাফেটের অংশে পরিণত হয়।
মানুষ মরে যাওয়ার পরও যে চুল বাড়তে থাকে তার কারণ হলো- যতক্ষণ পর্যন্ত শরীরের কোষে সরবরাহকৃত জ্বালানি ফুরিয়ে না যায়, ততক্ষণ পর্যন্ত কোষ তার কাজ করে চলে। মৃত্যুর পর যতক্ষণ ধরে কোষগুলো কাজ করে চলে ততক্ষণ পর্যন্ত চুল বর্ধিত হয়ে চলে। কোষের জ্বালানি যখন শেষ। হয়ে যায়, তখন তারা মরে যায় এবং চুলের বৃদ্ধিও তখন থেমে যায়। চুল আমাদের খুব দরকারি। চুল আমাদেরকে গরম রাখে, গায়ের
চামড়াকে রক্ষা করে এবং স্পর্শে সাড়া দেয়। জীবজন্তুর শরীরে গদির মতোচুল বাইরের আঘাত থেকে তাদের শরীরকে রক্ষা করে।
Leave a Comment