আয়তন ও জনসংখ্যা উভয় দিক দিয়েই আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম রাষ্ট্র। মোটামুটি তিনটি ভাগে সমগ্র দেশটিকে ভাগ করা যায়।
(১) পূর্বের প্রস্তরময় অঞ্চল
(২) সমতল মধ্যাঞ্চল
(৩) পর্বত সঙ্কুল পশ্চিমাঞ্চল।
এটি বিশ্বের সর্বাপেক্ষা সম্পদশালী ও উন্নত রাষ্ট্র। কলম্বিয়াসহ পঞ্চাশটি রাজ্য নিয়ে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র গঠিত। রাজ্যের রাজধানীগুলো থেকে পৃথক করে যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার এর একটি রাজনৈতিক কেন্দ্র গড়ে তোলার জন্যে কলম্বিয়া জেলা গঠিত হয়।
একটি যুক্তরাষ্ট্রীয় বা কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন কতকগুলো রাজ্য নিয়ে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র গঠিত। যুক্তরাষ্ট্র সরকার বৈদেশিক নীতি এবং প্রতিরক্ষা, বেকার সমস্যা, করনীতি ও রাজ্যের নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতার বহির্ভূত কিছু কিছু বিষয় নিয়ন্ত্রণ করে থাকেন।
আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের ৪৮টি রাজ্য একত্র সঙ্ঘবদ্ধ। এই ভূ-খণ্ডটির আয়তন উত্তর আমেরিকা মহাদেশের এক তৃতীয়াংশ। এর সীমারেখা পশ্চিমে প্রশান্ত মহাসাগর, উত্তরে কানাডা, পূর্বে আটলান্টিক মহাসাগর এবং দক্ষিণে মেক্সিকো। আলাস্কা রাজ্যটি মহাদেশের উত্তর-পশ্চিম প্রান্তে অবস্থিত এবং হাওয়াই-এর অবস্থান মধ্য প্রশান্ত মহাসাগর। ১৯৫৯ সালে হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জসমূহ আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যুক্ত হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যেক রাজ্যেরই নিজস্ব সংবিধান আছে এবং নির্বাচিত গভর্নরকে প্রধান করে একটি করে রাজ্য সরকার আছে। প্রতি রাজ্যেই দুজন করে সিনেটের যুক্তরাষ্ট্র সেনেট (আপার হাউস) এবং আয়তন ও লোকসংখ্যানুসারে কয়েকজন সদস্য 'হাউস অব রিপ্রেসেনটেটিভ' বা লোয়ার হাউসে নিজ নিজ রাজ্যের প্রতিনিধিত্ব করেন। যুক্তরাষ্ট্রের বা কেন্দ্রীয় সরকারের প্রধান হলেন রাষ্ট্রপতি ।
আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় পতাকার এক একটি রাজ্যের প্রতীকস্বরূপ এক একটি তারকা রচিত আছে। এরমধ্যে, সাতটি লাল রঙের এবং ছয়টি সাদা রঙের সমান্তরাল দাগ আছে যার মধ্যে দিয়ে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন থেকে ১৭৭৬ সালের ৪ জুলাই তারিখে স্বাধীনতাপ্রাপ্ত ১৩টি রাজ্যের পরিচিতি বোঝানো হয়েছে।
নিচে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের পঞ্চাশটি রাজ্যের লোকপ্রিয় নাম ও মূল নামগুলো দেওয়া হলো ।
আলাবাসা (কটন স্টেট) : এটি দক্ষিণাঞ্চলের শিল্প-সমৃদ্ধ রাজ্য। আলাকা (লাস্ট ফ্রন্টিয়ার) : রাজ্যটি তেল, খনিজ এবং মৎস্য ব্যবসায়ের জন্য প্রসিদ্ধ । 2.
G. এ্যারিজোনা (গ্র্যান্ড ক্যানায়ন স্টেট) : খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ রাজ্য।
8. আরকানসাস (ল্যান্ড অব অপরচুনিটি) : অরণ্য সমাচ্ছন্ন এই রাজ্যটি কৃষির জন্য বিখ্যাত ।
a. ৬. ক্যালিফোর্নিয়া (গোল্ডেন স্টেট) : রাজ্যটিতে ফল ও সব্জী উৎপন্ন হয়। কলোরাডো (সেন্টেনিয়াল স্টেট) : রাজ্যটি বিশাল বিশাল পর্বত, গভীর গিরিখাদ, অরণ্য ও হ্রদে ভরা।
9.
ক্যানেকটিকাট (কনস্টিটিউশান) : রাজ্যটিতে একটি পাহাড় এবং
অরণ্যবেষ্টিত সুবিশাল উপত্যকা আছে।
ডেলওয়ার (ডায়মন্ড স্টেট) : এটি মৎস্য চাষের জন্য বিখ্যাত ।
ফ্লোরিডা (সানসাইন স্টেট) : সামুদ্রিক বেলাভূমির জন্য পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্ররূপে রাজ্যটি বিখ্যাত।
১০. জর্জিয়া (এম্পায়ার স্টেট অব সাউথ) : তুলা এবং কাষ্ঠ উৎপাদনের
জন্য বিখ্যাত ।
১১. হাওয়াই (আলোহ স্টেট) : এটি বিশটি প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপ নিয়ে
গঠিত।
১২. ইদাহো (জেম স্টেট) : সুন্দর পাহাড়, মনোরম উপত্যকা ও নদীসমূহের জন্য বিখ্যাত ।
১৩. ইলিয়নইস (প্রেয়ারী স্টেট) : এটি সমৃদ্ধ উষ্ণ সমতলভূমি রাজ্য।
১৪. ইন্ডিয়ানা (হুসিয়ার স্টেট) : কয়লা এবং তেল উৎপাদনের বিখ্যাত ।
১৫. আইওয়া (হাওকিই স্টেট) : এটি একটি কৃষি সমৃদ্ধ রাজ্য। ১৬. কানসাস (সানফ্লাওয়ার স্টেট) : এটি শিল্প ও কৃষি সমৃদ্ধ রাজ্য ।
১৭. কেন্টাকী (ব্লু-গ্রাস স্টেট) : উন্নতজাতের ঘোড়ার জন্য রাজ্যটি বিখ্যাত । ১৮. লুইসিয়ানা (পেলিক্যান স্টেট) : রাজ্যটি তার নিপুণ স্থাপত্যকর্মের
জন্য বিখ্যাত ।
১৯. মেইনে (পাইনট্রি স্টেট) : সমস্ত নিউ ইংল্যান্ড স্টেটগুলোর মধ্যে বৃহত্তম রাজ্য।
২০. মেরীল্যান্ড (ওল্ড লাইন স্টেট) : এটি একটি কৃষি সমৃদ্ধ রাজ্য।
২১. ম্যাসাচুসেট (বে-স্টেট) : এটি হারবার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য বিখ্যাত । ২২. মিচিগান (ওয়েলভেরিন স্টেট) : এটি আমেরিকার মোটরগাড়ি শিল্পের
জন্য বিখ্যাত । ২৩. মিনেসোটা (নর্থস্টার স্টেট) : এটি পানিপথ ও নদীসমূহের জন্য বিখ্যাত।
২৪. মিসিসিপি (ম্যাগনোলিয়া স্টেট) : রাজ্যটি ঘন নিগ্লোবসতির জন্য
বিখ্যাত । ২৫. মিসৌরী (শো-মি. স্টেট) : দুটি বিখ্যাত নদীর মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত, ফসল সমৃদ্ধ রাজ্য ।
২৬. মন্টানা (ট্রেজার স্টেট) : এটি অরণ্য সমাচ্ছন্ন পাহাড় আবৃত এবং
পশু পালনের বিখ্যাত চারণভূমি। ২৭. নেব্রাস্কা (কোনহস্কার স্টেট) : শস্য উৎপাদন ও পশুপালনের জন্য বিখ্যাত ।
২৮. নেভাডা (সেব্রাশ স্টেট) : রাজ্যটি মরুভূমি ও পাহাড় সঙ্কুল। ২৯. নিউ হ্যাম্পশায়া (গ্রানাইট স্টেট) : স্বাধীনতার যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর জন্য বিখ্যাত।
৩০. নিউজার্সি (গার্ডেন স্টেট) : এটি কাঠের ও কলকারখানার জন্য
বিখ্যাত ।
৩১. নিউ মেক্সিকো (ল্যান্ড অব এন্চ্যান্ট স্টেট) : এটি একটি বৃহৎ তেল উৎপাদন কেন্দ্র।
৩২. নিউ ইয়র্ক (এম্পায়ার স্টেট) : রাজ্যটিতে দেশের বৃহত্তম নগরী
অবস্থিত ।
৩৩. নর্থ ক্যারোলিন (টার হিলো স্টেট) : দেশের ৫০% সিগারেট এই রাজ্যে উৎপাদন হয়।
৩৪. নর্থ ডাকোটা (সাইয়োক্স স্টেট) : গম উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত।
৩৫. ওহিও (বাকেট স্টেট) : রাজ্যটি আমেরিকার আটজন রাষ্ট্রপতির জন্য বিখ্যাত ।
৩৬. ওকলাহামা (সুনর স্টেট) : এ-রাজ্যে বহু ভারতীয় বাস করে। ৩৭. ওরিগন (বিভার স্টেট): একটি বৃহৎ মৎস্য শিকারের কেন্দ্র।
৩৮. পেনসিলভানিয়া (কিস্টোন স্টেট) : বৃহৎ ইস্পাত উৎপাদন কেন্দ্র। ৩৯, রোড আইল্যান্ড (লিটল রডি) : এটি আমেরিকার সর্বাপেক্ষা ক্ষুদ্র রাজ্য।
১০. সাউথ ক্যারোরিনা (পোলমেটো স্টেট) : এখানেই ফোর্ট সুমটারের
আক্রমণের মধ্যে দিয়ে আমেরিকার গৃহযুদ্ধ শুরু হয়েছিল। ৪১. সাউথ ডাকোটা (কোয়োটে স্টেট) : স্বর্ণ উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত
।
৪২. টেনেসি (ভলেন্টিয়ার স্টেট): রাজ্যটি গৃহযুদ্ধের অন্যতম কেন্দ্র ছিল।
৪৩. টেক্সাস (লাভস্টোর স্টেট): তেলকূপ সমৃদ্ধ রাজ্য ছিল। ৪৪. উটাই (বিলিড স্টেট) : রাজ্যটি বছরে ৩০০ সূর্যোজ্জ্বল দিনের জন্য বিখ্যাত।
৪৫. ভার্মোন্ট (গ্রীন ডোমিনিয়ন ) : রাজ্যটি মনোরম দৃশ্যাবলির জন্য বিখ্যাত ।
৪৬. ভার্জিনিয়া (ওল্ড ডোমিনিয়ন ) : সাদা কাঠ ও স্তম্ভ সমাকীর্ণ বাড়িগুলোর
জন্য বিখ্যাত ।
৪৭. ওয়াশিংটন (এভার গ্রীন স্টেট) : ওয়াশিংটন ডি.সি.-এর সঙ্গে এর কোনো সম্বন্ধ নেই। ৪৮. ওয়েস্ট ভার্জিনিয়া (মাউন্টেন স্টেট) : খনিজ ও কয়লা উৎপাদনের
রাজ্য।
৪৯. উইসকোনসিন (ব্যাজার স্টেট) : সুন্দর সুন্দর হ্রদের জন্য বিখ্যাত । ৫০. ওয়াইয়োমিং (ইকোয়ালিটি স্টেট) : বিশাল পশুপালন কেন্দ্র।
Leave a Comment