আগ্নেয়গিরি তৈরি হলো কী করে?
আগ্নেয়গিরি এক রকম পাহাড় বটে। তবে এমন পাহাড়, যার চূড়া দিয়ে। বের আসে আগুন, ধোঁয়া, ছাই। পৃথিবীর অন্তঃস্থলের অনেক কিছুই গলন্ত অবস্থায় আছে। আগ্নেয়গিরি গড়ে ওঠে পৃথিবীর ভেতর প্রচণ্ড ভাঙচুরের ফলে । আচ্ছা, বলতে পারো আগ্নেয়গিরি তৈরি হলো কেমন করে?
পৃথিবীর যতই ভেতরে যাওয়া যায়, তাপমাত্রা ক্রমশ বাড়াত থাকে। ধরো, ত্রিশ কি.মি. নিচে নামলে সেখানে যে তাপ আছে তাতে পাথর পর্যন্ত গলে তরল হয়ে যায়। এইভাবে যত গলতে থাকে ততই তার আকার বাড়তে থাকে। ফলে মোটামুটি যা তৈরি হয়, তাকে বলা হয় লাভা, ম্যাগমা (Lava, Magma)। ঐ আকার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তার চাপও বাড়তে থাকে। আর চাপের ফলে যখন ম্যাগমা বের হবার রাস্তা খোঁজে, তখন পৃথিবীর বুকে যেখানটা একটু নরম সেখান দিয়ে ম্যাগমা, লাভা ও অন্যান্য খনিজ পদার্থ সব এক সঙ্গে বের হয়ে আসে। এই হলো আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুদগীরণ। এই গলন্ত লাভা গড়িয়ে আসতে আসতে ক্রমশ ঠাণ্ডা হয়ে জমতে থাকে, আর জমতে জমতে পাহাড়চূড়া তৈরি করে ফেলে। ঠাণ্ডা হবার পর দেখা গেল, সেখানে গম্বুজাকৃতি (Cone Shaped) পাহাড় হয়েছে। তৈরি
কখনো কখনো ভেতরের গলন্ত পুঁজি সব শেষ হয়ে যায় আর সেখানকার পাহাড়কে বলা হয় মৃত আগ্নেয়গিরি। যেমন, জাপানের ফুজিইয়ামা। বর্তমানে পৃথিবীতে সাড়ে চারসর বেশি আগ্নেয়গিরির সন্ধান পাওয়া যায়। আগ্নেয়গিরির সংখ্যা সব চাইতে বেশি ইন্দোনেশিয়ায়। সব চাইতে উঁচু আগ্নেয়গিরি হলো, দক্ষিণ আমেরিকার আর্জেন্টিনায় ।
নদী কোথা থেকে এলো?
ইংরেজিতে নদীর নাম হলো 'রিভার' (River), শব্দটা এসেছে লাতিন রিপা (Ripa) থেকে যার মানে হলো নদীর তীর। পরবর্তীকালে অবশ্য নদী যদি এলোমেলো হয়ে বইতেও থাকে তবুও স্রোতস্বিনীর নাম নদীই থাকে। নদী হলো স্ত্রীলিঙ্গ আর এর পুংলিঙ্গ হলো নদ । সিন্ধু আর ব্রহ্মপুত্র নদ হলেও এদেরকে ইংরেজিতে রিভার বলা হয়।
কথা হলো, নদী এলো কোথা থেকে? আচার্য জগদীশচন্দ্র বোস (১৮৫৮-১৯৩৭) তাঁর আশ্চর্য সুন্দর ভাষায় প্রশ্ন শুনিয়েছিলেন, নদী, তুমি কোথা হইতে আসিয়াছ?' আর তার উত্তরে তিনি শুনেছিলেন, 'মহাদেবের জটা হইতে।' তারপর তিনি বলেছিলেন, সেই উক্তির বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা । কারণ, সমস্ত প্রাকৃতিক ঘটনাই তো বিজ্ঞানসম্মতভাবে ব্যাখ্যা করা যায়।
লক্ষ-কোটি বছর আগে পৃথিবী যখন তার সংসার গুছিয়ে বসতে পারেনি, তখন সব কিছুই উদ্দাম, এলোমেলো ছিল। গরম ধরিত্রীর সব কিছুই টগবগ করে ফুটছে, বাষ্প হয়ে আকাশে উড়ে গিয়ে মহাদেবের জটার মতো ভয়ংকর মেঘ হচ্ছে, তারপর বৃষ্টি, প্রলয়ংকর বৃষ্টি, আবার মেঘ , আবার বৃষ্টি। সব পানি তো আর বাষ্প হচ্ছে না, কিছু কিছু পৃথিবীতে থাকছে। তারপর ক্রমে যখন সব কিছু আস্তে আস্তে থিতিয়ে ঠাণ্ডা হতে লাগল, তখন অনেক পানি যেখানে জমা হলো, সেখানে দেখা দিল সমুদ্র। আর মাটির ওপর যে পানি জমল, ঢালু জমি বেয়ে তা নেমে গেল সাগরের দিকে। তার যাবার পথই হলো নদী। কিন্তু পানি তো সব সময় নামে নিচের দিকে। তাই পাহাড় চূড়ার পানি নামল তাড়াতাড়ি। যখন পৃথিবী আরও শীতল অবস্থায় এসে পৌঁছাল, তখন পাহাড়ের বরফ গলে তার পানি গড়িয়ে এলো নদীপথ ধরে।
কিন্তু সব নদী যে আবার বরফ গলে তৈরি হচ্ছে, তা নয়। অনেক নদী আবার বয়ে আসছে 'হিমবাহ' (Glacier) থেকে। ধরো, ভারতবর্ষের গঙ্গা নদী। হিমালয় পাহাড়ের গোমুখ নামে এক জায়গায় এর উৎপত্তি, তারপর গঙ্গোত্রী হয়ে গঙ্গা যখন দেবপ্রয়াণ পৌঁছাচ্ছে, তখন অন্য দিক থেকে 'পিন্ডার হিমবাহ' (Pindar Glacier) অলকানন্দাকে আরো সমৃদ্ধ করে এসে মিশছে তার সঙ্গে। হিমবাহ থেকে বয়ে আসা নদী পৃথিবীতে আরও অনেক আছে।
বহু নদী আছে, যারা আসছে পানিপ্রপাত থেকে, খুব বড় হ্রদ থেকে। যেমন-পূর্ব আফ্রিকার উগান্ডা, কেনিয়া, তানজানিয়ার মধ্যে যে "ভিক্টোরিয়া 'নিয়ামজা' (Victoria Nyanza) হ্রদ আছে তার থেকে বের হচ্ছে নীল-নদ (লম্বায় ৩৪৮৫ মাইল)। সমস্ত আফ্রিকা পার হয়ে গিয়ে মিশছে। ভূমধ্যসাগরের পানিতে ।
নদী শুধু প্রকৃতির খামখেয়ালি দান নয়। মানুষের সভ্যতার ইতিহাসে নদীর যে কী বিরাট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা, তার আর ইয়ত্তা নেই। সমস্ত মধ্য- প্রাচ্যের ইতিহাস গড়ে উঠেছিল টাইগ্রিস আর ইউফ্রেটিস (Tigris, Euphrates) নদীর তীরে তীরে, নেমে এসেছিল পারস্য উপসাগরের 'শাতুল আরব' (Shattel Arab) পর্যন্ত। ভারত-সভ্যতা এক সময় দেখা দিয়েছিল। সিন্ধু নদের কোলে মহেঞ্জোদারো শহরে। আজও পণ্ডিতরা এর ব্যাখ্যায় ব্যস্ত।
তাছাড়া নদীর কাজ ছিল আর এখনও অবশ্যই আছে- পানিপথে দেশের অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য সম্প্রসারণ। সুদূর প্রাচীনকাল থেকেই নদীর বুকে বাঁধ বেঁধে মানুষ নদীর কাছ থেকে অনেক কিছুই আদায় করেছে। বর্তমানে করছে শক্তি আহরণ, চলছে বিভিন্ন দেশে বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি। আর এ তো জানোই নদীর পানি ক্ষেত-খামারকে করে তোলে আরও উর্বর।
মহাসাগরের সব কী করে তৈরি হলো?
এ আর কে না জানে বলো যে, পৃথিবীর তিনভাগ পানি আর একভাগ স্থল। সব মহাসাগর জড়ো করলে তার আয়তন দাঁড়াবে ৩৬১.100 মিলিয়ন বর্গ কি.মি. (১৩,৯৪,০০০ বর্গ মাইল)। এই সব মহাসাগর তৈরি হলো কী করে?
বৈজ্ঞানিকরা বলছেন, মহাসাগর সঠিক কবে যে তৈরি হলো, সে খবর জানা ভারি কঠিন। তবে একথা দারুণ ঠিক যে, পৃথিবী গড়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সে সময়কার ভূগোলে বা ম্যাপে নিশ্চয়ই সাগরের নামগন্ধ ছিল না। মহাসাগরদের বয়সের একটা মোটা আন্দাজ পাওয়া যায় যখন আমরা সাগর জলের খনিজ পদার্থদের নাড়াচাড়া করি। আর এর থেকে হদিস পাওয়া যায়, মহাসাগরেরা সব হয়ত পঞ্চাশ থেকে একশ কোটি বছর আগে ম্যাপে তাদের জায়গা গুছিয়ে নিয়েছিল।
তবু বৈজ্ঞানিকরা তো আর হাল ছাড়তে পারেন না। ভারা ঠিক বের করলেন, সেই আদিম অবস্থায় পৃথিবীর সবটাই দাউ দাউ করে জ্বলছিল। ওপরের অংশে সেই প্রচণ্ড তাপে জ্বলন্ত পাথর ছাড়া আর কিছুই ছিল না। তারপর বহু লক্ষ-কোটি বছর পর পৃথিবী যখন একটু জুড়াতে আরম্ভ করল তখন সেই ফুটন্ত পৃথিবী থেকে গ্যাস উঠে আকাশকে আচ্ছন্ন করল। আকাশে গ্যাসের সমাবেশ মানে মেঘ জমে যাওয়া। আর মেঘ মানেই বৃষ্টি। কিন্তু সে বৃষ্টি তো আর 'রেন-গেজ' (Rain-Gauge) দিয়ে মাপবার বৃষ্টি নয়, সে হলো প্রলয়ংকর বৃষ্টি। পৃথিবীর বুকে বৃষ্টি পড়ার মানেই তখনকার সেই অবস্থায় সঙ্গে সঙ্গে বাষ্প হয়ে উঠে যাওয়া। তার মানে একবার বৃষ্টি তারপর বাষ্প, আবার বৃষ্টি, আবার বাষ্প। এই টানাপোড়েন চলল বহু কোটি বছর। এক সময় পৃথিবীকে হার মানতেই হলো, দাপা দাপি হলো শান্ত। জ্বলন্ত পাথর জমতে আরম্ভ করল, বৃষ্টির জলে পৃথিবীতে পড়ল পলিমাটির আস্তরণ। মাটি সবুজ হতে আরম্ভ করল, কিন্তু ঐযে মহাপ্রলয়ের বৃষ্টি, পৃথিবীর একটু ঠাণ্ডা হয়ে আসা অবস্থায় আর তার সবটুকু বাষ্প হতে পারল না, জমতে লাগল পৃথিবীর বুকে। তবে সব জায়গায় একরকম নয়। পানি গড়িয়ে যেতে লাগল, যেসব অংশ চালু সেইসব জায়গায়। শেষকালে সেই জমে যাওয়া পানি এমন আকার নিল যে হয়ে দাঁড়াল মহাসাগর। এর মধ্যে কিছু বৈজ্ঞানিক আবার ধারণা করলেন, প্রশান্ত মহাসাগরের যা আয়তন চাদেরও তাই। অতএব পৃথিবীর সেই নিজেকে নিয়ে লোফালুফির সময় নিশ্চয়ই প্রশান্ত মহাসাগরের অংশটাই ছিটকে মহাকাশে গিয়ে পৃথিবীর স্বাভাবিক উপগ্রহ (Natural Satellite) অর্থাৎ কি না চাঁদ হয়ে শোভমান হলো। বৈজ্ঞানিকরা এখনও নিরন্তর অন্যান্য অনেক কিছুরই মতো পৃথিব নিয়েও গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
সমুদ্রের পানি লোনা কেন?
সমুদ্রের বহু নাম। এক নাম হলো লবণাম্বুধি। এর মানে হলো, সমুদ্রের পানি লবণাক্ত, লোনা। তা সমুদ্রের পানিতে লবণ আছে। লক্ষ মণ লবণ প্রতিনিয়ত এর পানি সেঁচে শুকিয়ে তৈরি হচ্ছে, আমাদের পাতে পড়ছে। লবণ না থাকলে কী হতো বলা যায় না, তবে আছে বলেই সাহিত্যে বহু উপমা তৈরি হয়েছে। তাই পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মনীষীদের আর সেই সঙ্গে খেটে- খাওয়া মানুষকে ইংরেজি ভাষায় বলা হয় ধরিত্রীর লবণ-সল্ট অফ দি আর্থ' (Salt of the Earth) । আর যুগে যুগে মানুষ সমুদ্রের পানিতে লবণ দেখে রচনা করেছে অসংখ্য উপাখ্যান, নানা দেশে প্রায় একই ভাষায় ।
তবু লবণাক্ত সমুদ্রের জলের একটা বিজ্ঞানসম্মত ব্যাখ্যা আছে, আর সেটাই আমাদের কাছে দরকারি। এক গ্যালন (প্রায় সাড়ে চার লিটার) সমুদ্রের পানিতে সিকি পাউন্ড (প্রায় একশ গ্রাম) লবণ পাওয়া যায়। সমুদ্রের পানির আরও একটা মজার ব্যাপার হলো, বহমান মহাসাগরের চাইতে যে সমুদ্র একটু ঘেরা জায়গায় অবস্থিত, যেমন : ভূমধ্যসাগর, তার পানি আরও বেশি লবণাক্ত হয়। আন্দাজ করা হয়, সব মহাসাগরের পানি। থেকে যদি লবণ সেঁচে এক জায়গায় জড়ো করা যায়, তবে তার ওজন। দাঁড়াবে এগারশ কোটি টনেরও বেশি। আর এই পরিমাণ লবণ দিয়ে ২৮৮ কি.মি. (১৮০ মাইল) উঁচু আর ১.৬ কি.মি. (এক মাইল) চওড়া দেওয়াল তৈরি করা যায়, তবে তা দিয়ে তাবৎ বিশ্বকে নিরক্ষরেখা বরাবর বেড় দেওয়া যাবে।
উপাখ্যান যে গল্পই বলুক না কেন, সমুদ্রের পানিতে লবণ আসে কোথা থেকে? আমাদের জানা আছে, লবণ পানিতে দ্রবণীয়। প্রথম কথা হলো, সমস্ত নদীর পানি, বৃষ্টির পানি, এরা সবাই সাগরে এসে মিশবার আগে সাথে করে আনে তাদের সঙ্গে নানা খনিজ পদার্থ, লবণ, আর অনেক কিছু। তোমরা তো জানো গরমকালে সূর্যতাপে পানি বাষ্প হয়ে আকাশে উড়ে গিয়ে মেঘ হয়, তারপর বর্ষা নামে বৃষ্টির আকারে। ঐ যে সাগরের পানি যখন উঠতে থাকে, তখন পানির সঙ্গে লবণ তো আর যেতে পারে না, সে লবণ পড়ে থাকে সাগরের বুকে। ফলে সাগরের পানি লোনা হতেই থাকে। আর এমন কাটো ঘটছে সেই সৃষ্টির আদিকাল থেকে।
এমনিতে লবণ দুভাবে পাওয়া যায়, আর তাদের নামও আলাদা। সমুদ্র থেকে যে লবণ আসে তার নাম হলো, কড়কচ লবণ। আর খনির নুনের নাম হলো, সৈন্ধব লবণ। মজাটা লক্ষ করে দেখো খনি থেকে পাওয়া গেলেও সৈন্ধবের ব্যুৎপত্তি হলো সিন্ধু, মানে সাগর।
ডেড সী কাকে বলে জানো?
ডেড সী (Dead Sea) হলো মধ্যপ্রাচ্য, এর একদিকে জর্দান (Jordan) আর অন্যদিকে ইসায়েল (Israel) নামে সী বা সমুদ্র হলেও আসলে ডেড সী হলো একটি হ্রদ, বিস্ময়কর হ্রদ। লোনা পানি অন্য হ্রদেরও হতে পারে, যেমন-সোভিয়েত রাশিয়ার 'কাসপিয়ান সী' (Caspian Sea)। কিন্তু যেখানে অন্য লোনা পানিতে নুনের পরিমাণ শতকরা চার থেকে ছয় ভাগ মাত্র, ডেড সী-র পানিতে তার পরিমাণ হলো শতকরা পঁচিশ ভাগ।
আর শুধু লবণ নয়, এর পানিতে আছে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম ক্লোরাইড' (Magnesium Chloride) এবং জন্য বহু রাসায়নিক পদার্থ যা যে কোনো জীব- ব-জন্তুর পক্ষে মারাত্মক বিষ। তাই ডেড সী-র ধারেকাছে কোনো প্রাণীর বসবাস নেই ।
ডেড সী-র আয়তন হলো ৭৭ কি.মি. (৪৮ মাইল) লম্বা আর ৫ থেকে ১৮ কি.মি. (৩ থেকে ১১ মাইল) চওড়া। সমুদ্রপৃষ্ঠ (Sea Level) থেকে ডেড সী হলো প্রায় ৪০০ মিটার (১৩০০ ফুট) নিচে। কোটি কোটি বছর আগে হয়ত এটা অনেক উঁচুতে ছিল, আর ডেড সী-র জন্ম রহস্য আজও পরিষ্কার জানা যায়নি। হয়ত এক সময় এটা সমুদ্রই ছিল, আর কালক্রমে পৃথিবীর ওলট-পালট হবার সময় হয়ত বা ডেড সী মূল সাগর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ল ।
শুধু যে এর ধারে-কাছে কেউ বসবাস করে না, তাই নয়। জর্দান নদীর পানি এতে এসে পড়ে, সে পানির সঙ্গে যেসব জলচর প্রাণীরা ভেসে আসে, ডেড সী-তে পড়া মাত্র তারা সব ডেড হয়ে যায়, মানে মরে যায়। ডেড সী- র পানির আরেক মজা হলো, এর আপেক্ষিক ঘনত্ব এত বেশি যে হাত-পা বেঁধে জলে ফেলে দিলেও পানিতে ডোবা সম্ভব নয়।
ডেড সী নিজে যতই বিপজ্জনক হোক, আমরা এর দৌলতে খ্রিস্টীয় অব্দ আরম্ভ হবার সময়ের বেশ কিছু দরকারি তথ্য খুব সম্প্রতি পেয়েছি। ১৯৪৭ সালে মধ্যপ্রাচ্যে যখন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের (১৯৩৯-৪৫) পর ভাঙা- গড়ার কাজ খুব দ্রুত চলছে, তখন ডেড সীর আশেপাশের পাহাড় থেকে উদ্ধার করা হলো একশ পঁয়ত্রিশটা স্ক্রোল (scroll) বা পাকান পুঁথি। তাতে হাঁফ্র (Hebrew) আর আরামাইক (Aramaic) ভাষায় লেখা বাইবেলের বহু শ্লোক আর অন্য কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। আরামাইক মধ্যপ্রাচ্যে এক সময় একমাত্র প্রচলিত ভাষা ছিল আর এর থেকে জন্ম নিয়েছে হীব্রু আর আরবি ভাষা।
Leave a Comment