সাধারণত দেখা যায়, নবজাত শিশুরা জন্মের কয়েক মাস খুব বেশি কান্নাকাটি করে। কিন্তু, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অভ্যাসও লক্ষণীয়ভাবে কমে আসে। ছবছর বয়সের পর তাদের এই অভ্যাস প্রায় থাকেই না। তোমরা কি জানো শিশুরা এত বেশি কাঁদে কেন?
বস্তুত ভূমিষ্ঠ হবার পর ক্রন্দন ধ্বনির মাধ্যমেই শিশুর প্রথম বাক্ স্ফুরণ হয়। এটা অনেকটা জীব-জন্তুদের পারস্পরিক সংবাদ আদান-প্রদানের মতো ব্যাপার। শিশুরা তাদের অনুভূতি এবং চাহিদা প্রকাশ করার মতো শব্দের সঙ্গে পরিচিত থাকে না বলে কান্নার মধ্যে দিয়েই সেটিকে প্রকাশ করে। কিন্তু শিশুর কান্নার থেকে এটা বোঝা মুস্কিল যে, সে, ক্ষুধার্ত না অসুস্থ। সাধারণত দেখা গেছে যে, বাচ্চারা সত্যি সত্যিই কষ্ট না পেলে তাদের চোখ দিয়ে পানি বেরোয় না ।
অবশ্য অধিকাংশ মায়েরাই কান্নার লক্ষণ দেখে বুঝতে পারেন, শিশুটির খিদে পেয়েছে কি না অথবা সে রাগ করেছে, না ব্যথা পেয়ে কাঁদছে। শিশুটি যে কেন কাঁদছে সেটা তারা প্রায় সঠিকভাবেই বলতে পারেন। যেমন যদি কোনো শিশু সত্যি সত্যিই ক্ষুধার্ত হয় তাহলে তাকে আদর করলেও কান্না থামায় না। কিন্তু, যদি সে বিরক্তিবোধ করে কাঁদে তাহলে তাকে কোলে নিয়ে বেড়ালে বা মজার কোনো জিনিস দেখালে তার কান্না থেমে যায়।
সাম্প্রতিক এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, যদি কোনো মা তার সন্তানের কান্নার কারণগুলো সহজে ধরতে পারেন এবং তার চাহিদা মেটানোর চেষ্টা করেন তাহলে শিশুটি এক বছরের মধ্যেই অন্যান্য শিশুদের তুলনায় অনেক তাড়াতাড়ি কান্নার অভ্যাস ছেড়ে দেয়।
চার-পাঁচ মাস বয়সে পৌছানোর সঙ্গে সঙ্গে অনেক শিশুই কিছু কিছু সাঙ্কেতিক শব্দ বলতে শিখে ফেলে। এই শব্দগুলোকে আমরা শিশুর কলধ্বনি (Bubbling sound) বা বক্কানি বলি। দেখা গেছে, শিশুরা এইসব ধ্বনি উচ্চারণ করে খুব মজা পায়।
শিশু যে কেন কাঁদছে সেটি সবসময় সঠিকভাবে জানা সম্ভব নয়। কোনো কোনো সময় দেখা যায় যে, শিশু ক্ষুধার্ত বা ক্লান্ত নয়, বিরক্তও হয়নি, ভয় বা ব্যথাও পায়নি অথচ সে কেঁদে চলে। তবে এটা ঠিক, মূলত শিশুটি তার মনের ইচ্ছা প্রকাশ করার জন্যই কাঁদে ।
Leave a Comment