কলেজ শব্দটা এসেছে লাতিন থেকে যার মানে হলো, কতকগুলো সাধারণ কাজের জন্য কিছু সমস্তরের মানুষের একটি সংস্থা। সাধারণত নির্বাচনের জন্য এই কলেজগুলো ব্যবহৃত হতো, যেমন: পোপের নির্বাচন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ইত্যাদি। আবার কলেজের অন্য একটি মানে হলো, উচ্চশিক্ষার জন্য একটি প্রতিষ্ঠান। মধ্যযুগে এই সংস্থাগুলো সর্বোচ্চ শিক্ষাদানের জন্য ক্রমে ইউনিভার্সিটি বা বিশ্ববিদ্যালয় নামে পরিচিত হতে থাকে। গোড়ার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ছিল এমন এক জায়গা, যার নিজের বাড়িঘর থাকত না, কোনো বাঁধা শিক্ষকও নয়। শুধু শিক্ষাবিদ বা পণ্ডিতজনেরা একটা জায়গায় একত্রিত হতেন। উচ্চশিক্ষা লাভের ইচ্ছা থাকলে কিছু লোক একটা বড় বাড়ি ভাড়া করে সেখানে শিক্ষকের কাছ থেকে বিদ্যালাভ করতেন।
সময় পাল্টানোর সঙ্গে সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাড়ি হলো, নিয়ম-কানুনও হলো । আধুনিক ধরনের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে উঠেছিল নবম শতাব্দীতে ইতালির সালেরনো (Salerno) শহরে, ১২৩১ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা পেল। পৃথিবীর প্রাচীনতম বিশ্ববিদ্যালয় আরম্ভ হয়েছিল ৮৫৯ সালে মরোক্কোর কারুইন (Karuin) শহরে ।
দ্বাদশ শতাব্দীর শেষভাগে ইতালিতে অনেকগুলো বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে উঠেছিল। প্যারিসের ইউনিভার্সিটি দ্বাদশ শতাব্দীর মধ্যভাগে একটি আদর্শ প্রতিষ্ঠান হিসেবে গণ্য হয়েছিল। ভারতবর্ষে নালন্দ আর তক্ষশিলা প্রাচীনকালে সভ্যজগতে অত্যন্ত সুপরিচিত হয়ে উঠেছিল। দ্বাদশ শতাব্দীতেই ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ড আর কেম্ব্রিজ প্রসিদ্ধ ইউনিভার্সিটিরূপে গড়ে উঠল। উত্তরোত্তর পৃথিবীময় বিশ্ববিদ্যালয় দেখা দিতে লাগল। ভারতবর্ষে কলকাতা শহরে ১৮১৭ সালে হিন্দু কলেজ প্রতিষ্ঠিত হলো, পরে যার নাম হয় প্রেসিডেন্সি কলেজ।
আজকের যুগের ইউনিভার্সিটি বিগত যুগ থেকে সম্পূর্ণ আলাদা ধরনের। এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে বহু কলেজ যুক্ত হয়। অবশ্য শিক্ষাব্যবস্থা বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন রকমের। আবার বিশেষ বিশেষ শিক্ষার জন্য বিশেষ ধরনের বিশ্ববিদ্যালয় দেখা দিল ।
Leave a Comment