পৃথিবী জুড়ে—মানুষের গায়ের রং আলাদা আলাদা হতে দেখা যায়। উদাহরণস্বরূপ, উত্তর ইউরোপের অধিবাসীদের গায়ের চামড়ার রং সাদা। অপরপক্ষে, পশ্চিম আফ্রিকার অধিবাসীদের গায়ের চামড়ার রং হয় কালো। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অধিবাসীদের গায়ের রং হয় হলদে মতো (Yellowish বা পীতাভ)। প্রকৃতপক্ষে মানুষের গায়ের রংয়ের শ্রেণিবিভাগ করা কষ্টকর।


মানুষের চামড়া বিভিন্ন বর্ণ বৈচিত্র্যযুক্ত। তোমরা কি জানো মানুষের চামড়ার বর্ণ আলাদা আলাদা হয় কেন?




মানুষের চামড়ার বর্ণ শরীরের তিন প্রকার রঞ্জক পদার্থের (Pigments) উপর প্রধানত নির্ভর করে। এর প্রথমটিকে বলে 'মেলানীন' (Melanin)। এটি একটি পিঙ্গল বর্ণের (Brown-বাদামি) পদার্থ। গাঢ় হলে একে কালো দেখায়। দ্বিতীয়টিকে বলে ক্যারোটিন (Carotene)। এটি হলুদ বর্ণের এক পদার্থ। আর তৃতীয়টিকে বলে হিমোগ্লোবিন (Haemoglobin)। এটাই রক্তের লাল রঞ্জক পদার্থগুলোর বিভিন্ন অনুপাতে মিশ্রণ চামড়ার রংকে আলাদা আলাদা করে তোলে। যার শরীরে মেলানীনের পরিমাণ বেশি তার গায়ের বর্ণ হবে কালো। অপরপক্ষে, যার শরীরে ক্যারোটিনের পরিমাণ বেশি তার গায়ের রং হবে হলদে মতো ।




সূর্যের আলোর অতি বেগুনী (Ultraviolet) রশ্মি এসে গায়ে পড়লে শরীরের গ্রন্থিগুলো (Tissues ) অধিক মাত্রায় মেলানীন উৎপন্ন করে। এই জন্য ক্রান্তীয় অঞ্চলে (Tropical Regions) যারা বাস করে, তাদের গায়ের রং হয় অত্যন্ত কালো। রৌদ্রে এক নাগাড়ে কয়েক দিন কাজ করলে আমাদের গায়ের রং কালো হয়ে যায়। শীতপ্রধান দেশের লোকের গায়ের রং হয় সাদা। কারণ তাদের গায়ের চামড়ায় মেলানীনের পরিমাণ খুব কম থাকে। উক্ত রঞ্জক পদার্থের অভাব ঘটলে শরীরে সাদা সাদা দাগ দেখা দেয়। একে 'শ্বেতী' বা "ধবল” (Leucoderma) বলে। যে কেউ এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে।





Leave a Comment