যখনই কেউ কাঁদে তখনই তার চোখ দিয়ে পানি বেরিয়ে আসে। তোমরা কি জানো কেন এমনটি হয়?




নাট্য মঞ্চের পর্দার মতো মাংসপেশীর সাহায্যে আমরা আমাদের চোখের পলক ফেলি বা চোখ পিটপিট করি। চোখের পাতার সঞ্চালন এত দ্রুত হয় যে, তা আমাদের দৃষ্টিকে ব্যাহত করে না। চোখের পলক পড়া একটি অনৈচ্ছিক ক্রিয়া। প্রতি ছয় সেকেন্ডে একবার করে সারাজীবন ধরে ক্রিয়াটি চলতে থাকে ।




প্রত্যেকটি চোখের বাইরের কোণে “অশ্রুগ্রন্থি" বলে একটি গ্রন্থি থাকে। কতগুলো নালীপথে সেখান থেকে চোখের পানি চোখের উপরের পাতায় চলে যায়। তারপর সেখান থেকে অন্য নালীপথে পানি চোখ থেকে বেরিয়ে আসে। প্রতিবার যখনই আমরা চোখের পলক ফেলি তখন চোখের পানির নালীপথের মুখ দিয়ে কিছু তরল পদার্থ বেরিয়ে আসে। এটাই চোখকে সিক্ত রাখে এবং চোখের শুকিয়ে যাওয়াকে প্রতিরোধ করে। যখন আমরা কাঁদি তখন চোখের পানির নালী পথের মুখ দিয়ে বেশি পরিমাণ তরল পদার্থ নিঃসরণ হয়। তখন আমরা তাকে 'অশ্রু' বা চোখের পানি বলি। 


কখনও কখনও খুব বেশি হাসলেও চোখের পানি বেরিয়ে আসে। এর কারণ হলো—যখন আমরা হাসি তখন মাংসপেশী অশ্রুগ্রন্থিকে সংকুচিত করে। তার ফলে চোখের পানি বেরিয়ে আসা শুরু করে।




যখন আমরা পেঁয়াজ কাটি, তখনও চোখের পানি বেরিয়ে আসে। প্রকৃতপক্ষে, পেঁয়াজ এক প্রকার উদ্বায়ী বস্তু (Volatile) পরিত্যাগ করে। যখন তা আমাদের চোখে পৌঁছায় তখন তার জ্বলুনি থেকে চোখকে রক্ষা করতে চোখের পানি বেরিয়ে আসে। চোখের পানি তখন ঐ পদার্থকে ধুয়ে ফেলে ৷ চোখে ধোঁয়া গেলেও ঠিক একই ঘটনা ঘটে।




কোনো কোনো দুঃখজনক সংবাদ-প্রতিবর্তী ক্রিয়ার (Reflex action) মারফত চোখের পানি উৎপন্ন করে, এই ক্রিয়াটি তখনই ঘটে, যখন আমরা আমাদের অনুভূতিকে ভাষায় ব্যক্ত করতে পারি না ।





Leave a Comment